Friday, January 26, 2007

সিভিল সোসাইটি কয় কারে ? ৩

আমি নিরপেক্ষ লোক না । আমার রাজনৈতিক মতামত খুব স্পষ্ট । আমার মতামত কোন দল ধারণ করে বা আদৌ কেউ করে কিনা সেইটা নিয়া তর্কাতর্কি হইতে পারে । আর কোন দলের সমর্থক যে হইতেই হবে এইটাও কিন্তু একধরনের ভাববাদী বা অ্যাবসল্যুটিস্ট চিন্তা । রাজনৈতিক ঘটনাবলীর বিশ্লেষক , যে কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সমর্থনে কথা কইতাছে না , সে কিন্তু নিরপেক্ষ না । তারও একটা সাইড আছে এবং সেই সাইডরে সুনির্দিষ্ট সাইনবোর্ডে অনুবাদ করা নাও যাইতে পারে । মানে সেই সাইনবোর্ড খোলা চোখে নাও দেখা যাইতে পারে । কিন্তু তার অস্তিত্ব আছে । যেমন , বাংলাদেশরে যদি আমরা নির্ভরশীল দরিদ্র দেশের মডেল ধরি , সেইখানে কিছু লোক দেখা যাবে যারা ভাল খায়দায়, ভাল একটা বাসায় থাকে , কোন দলের সদস্য না এবং যতদুর সম্ভব মাইর খাওয়ার রাস্তা এড়াইয়া চলে , দ্যাশের ভবিষ্যত নিয়া খুবই চিন্তিত, পোলাপানরে "উচ্চ সাংস্কৃতিক সুশিক্ষা" দেয়, এবং ষব রকম তর্কাতর্কিতেই সবময় অন্য একটা লাইন বাইর করার তালে থাকে যাতে তার খোমাটা নজরে পড়ে । মাঝে মধ্যে "নাগরিক ইস্যু"তে হালকার উপর ঝাপসা দৌড়ানি খাইয়া বাসায় আইসা আত্মীয় স্বজনরে ফোন কইরা ১০ বছর ধইরা হেই গল্প করে ।
পেশাগত জীবনে কিন্তু তারা সকলেই "সৎ"। হয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, নয় রিটায়ার্ড আমলা কাম লেখক, এন.জি.ও পরামর্শদাতা ইত্যাদি । আমরা ছুডু লোকেরা রাস্তাঘাডে যা করি, যেমন লইয়া দৌড় দেওয়া, হেগুলা খারাপ খারাপ চুরি তারা করে না । বাংলাদেশের রাজনৈতিক ওঠানামায় তাগো কিছুই যায় আসে না , বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই বিকল্প ব্যাবস্থা তারা কইরা রাখছেন ।যারা রাখেন নাই তারাও অন্তত শেষ পর্য›ত চেষ্টা কইরা যান যেকোন ভাবে এই ময়লা-ছয়লা দেশ থিকা গা বাচাইয়া চলতে । এদের মধ্যে শ্রেণীভেদ আছে । কারণ নিম্নমধ্যবিত্তশ্রেণীর অংশটা "সিভিল সোসাইটি " জাতীয় সংগঠণে বা সমাবেশে আমন্ত্রিত হন না । সেইখানে আসেন এদের মধ্যে যাদের ট্যাকের অবস্থা ভালো তারাই ।
আমরা কি, কি হইতে পারতো বা কি হওয়া উচিতের মতো অ্যাবসার্ড বিষয়ের মাধ্যমে একটা বিষয়রে বুঝার চেষ্টা করুম ? না কি যা ঘটছে, ঘটতেছে এবং এক্সিসটিং তথ্যাবলী কি নির্দেশ করে সেইটা বিচার করুম ? আমার মতে ২য় টা সঠিক । তাতে আমরা সিভিল সোসাইটি বলতে কিছু উচ্চমধ্যবিত্তরে বুঝি যারা শোষকের নিরাপদ সহায়ক হিসাবে স্বচ্ছল জীবন যাপন করে । জনৈক দাড়িওয়ালা জার্মানের মতে "বুর্জোয়া ভদ্রলোক"। শোষিকের সহায়ক হিসাবে তারা শোষকদের নানারকম বুদ্ধি পরামর্ষ দেয় , কিভাবে ব্যাথা কম দিয়া ভুখা-নাঙ্গা মাইনসের গোয়া মারা যায় ।